চট্টগ্রামে কিছুটা কমেছে আগাম সবজি ও পেঁয়াজের দাম

চট্টগ্রামের বাজারে শীতের আগাম সবজি আসতে শুরু করেছে দুই সপ্তাহ ধরে। এতে দাম কমতে শুরু করেছে বিভিন্ন সবজির। তবে স্বস্তি ফেরেনি ক্রেতাদের মনে। খুচরা বাজারে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনসহ অধিকাংশ সবজি এখনো ৭০ থেকে ১০০ টাকার আশপাশে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাজারে দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে নেমে আসতে পারে।

আগস্ট মাস থেকে চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে অধিকাংশ সবজির দাম ১০০ টাকার বেশি ছিল। উৎপাদন অঞ্চলে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে দাম বেড়েছিল। তবে কিছু ব্যবসায়ী বাজারে ‘সিন্ডিকেট’ করে মূল্য বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল ক্রেতাদের। এরপর বাজারে অভিযানও চালিয়েছে জেলা প্রশাসনের বিশেষ টাস্কফোর্স। এর মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতের আগাম সবজি। এতে বাজারে দাম কমতির দিকে।

আজ শুক্রবার নগরে সবজির বৃহৎ আড়ত রিয়াজউদ্দিন বাজারে পণ্য পরিবহন আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। কাঁচা মরিচ, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ অধিকাংশ সবজির সরবরাহ বেড়েছে। আড়তদারেরা জানান, শীতকালীন সবজিসহ অধিকাংশ সবজির দাম কমতির দিকে। দু-তিন দিনে দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। কোনো কোনো সবজির দাম কমেছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

আজ আড়তে প্রতি কেজি ফুলকপি ৪০ থেকে ৬৫, বাঁধাকপি ২৭ থেকে ৩৬, বেগুন ৩৫ থেকে ৩৮, মুলা ও মিষ্টিকুমড়া ৩৫ থেকে ৪০, ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙে ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং আলু ৫৮ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে। তবে খুচরা পর্যায়ে এসব সবজি বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ১০০ টাকায়। প্রতিটি সবজিতে আড়ত ও খুচরায় পার্থক্য ছিল ১০ থেকে ২০ টাকা।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের সবজির আড়তদার ফারুক শিবলী বলেন, আড়তে দাম কমছে। তবে সরবরাহ তুলনামূলক সেভাবে বাড়েনি। আশা করা যায়, চলতি মাসের মাঝামাঝি দাম কমে আসবে। খুচরায় প্রভাব পড়তে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

এদিকে গত বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পেঁয়াজ আমদানির ওপর থেকে শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে। দেশের বাজারে পণ্যটির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কেজিতে এক থেকে দুই টাকা কমেছে। এখন পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি ৬৫ থেকে ১০২ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭৫ থেকে ১০৫ টাকা। চট্টগ্রামের বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের চাহিদা বেশি।

বাজারে চাহিদার শীর্ষে ভারতীয় পেঁয়াজ। এরপর রয়েছে মিসর, পাকিস্তান ও চীনা পেঁয়াজ। এসব পেঁয়াজের মধ্যে মিসরীয় পেঁয়াজের সরবরাহ রয়েছে বাজারে। আজ প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ আড়তে বিক্রি হয়েছে ৮৮ থেকে ১০২ টাকা। অন্যদিকে মিসরীয় পেঁয়াজের দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ১০০ থেকে ১১৫ টাকা।

পেঁয়াজের পাশাপাশি আমদানি করা আদার দামও বর্তমানে কম। প্রতি কেজি আদা ৯০ থেকে ১০০ টাকা পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে। তবে বাজারে রসুনের দাম বেড়েছে। মানভেদে প্রতি কেজি রসুন আড়তেই ২০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হয়েছে।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিঞা মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহম্মদ ইদ্রিস বলেন, পেঁয়াজের দাম সীমান্তের বাজারে এখনো বাড়তি। সে তুলনায় ব্যবসায়ীরা লোকসানে বিক্রি করছেন। চীনা রসুনের দাম এখন বাড়তি। বাজার এই দামের মধ্যেই স্থিতিশীল থাকবে।

Related Posts

আইনজীবী আলিফ হত্যা: দুই আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি চন্দন দাস এবং অপর আসামি রিপন দাসের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর মধ্যে চন্দন দাসকে সাত দিন এবং রিপন…

Read more

স্ত্রী হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

তিন বছর সাত মাস পর স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে…

Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *