চট্টগ্রামে ‘তারুণ্যের গণসমাবেশ’

অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও দু-এক বছর দেখতে চান নুরুল হক

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও দু-এক বছর দেখতে চান গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তবে সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আপনারা ভালো কাজ করবেন, আমাদের সমর্থন পাবেন। গণবিরোধী কর্মকাণ্ড করলে এক সেকেন্ডও সময় নেব না আপনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।’

আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরের লালদিঘি মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। ‘তারুণ্যের গণসমাবেশ’ শিরোনামে এ সমাবেশের আয়োজন করে গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি)। এতে গণ অধিকার, যুব অধিকার, ছাত্র অধিকার ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে নুরুল হক বলেন, ‘শুধু একটি নির্বাচনের জন্য কিংবা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য ছাত্র–জনতা জীবন দেয়নি। কাজেই নির্বাচন নিয়ে, ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে অস্থির না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে বা চাপে ছাত্র-জনতা এই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেয়নি। রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমরা ৫৩ বছর দেখেছি। আমরা আরও দু-এক বছর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই।’

এর আগে বেলা আড়াইটা থেকে লালদিঘি ময়দানে গণ অধিকার পরিষদ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এ সময় তাঁরা গণ অধিকারের সমর্থনে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় থাকার প্রশ্নে ‘ব্ল্যাংক চেক’ দেওয়া হবে না বলে উল্লেখ করে নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাজকর্ম দেখে অটোরিনিউয়াল (স্বয়ংক্রিয় বৃদ্ধি) সময় দেব।’ ৫৩ বছর পর সুযোগ এসেছে উল্লেখ করে নুরুল হক বলেন, ‘হেলাফেলায় সুযোগ নষ্ট করা যাবে না। রাতারাতি নির্বাচন হলে এই ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে না। গণ-অভ্যুত্থানে যারা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেই ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের জন্য কোনো কোনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে স্পেস (সুযোগ) দেওয়ার কথা বলছে। আমরা ক্ষমতায় বসতে জীবন দিই নাই। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে যদি প্রতিরোধের ডাক দিতে হয়, এই চট্টগ্রামের মাটি থেকে সে ডাক দেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে প্রয়োজনে ঢাকায় মহাসমাবেশ করব, আপনারা প্রস্তুতি নিন।’

আওয়ামী লীগের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘আমরা শান্তি এবং সম্প্রীতির নতুন রাজনৈতিক পরিবেশ গড়তে চাই। তাই বলে আমার ভাইয়ের রক্তে যাদের হাত লাল হয়েছে, তাদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক (হাত মেলানো) করব না। এত তাড়াতাড়ি এই নৃশংসতার স্মৃতি ভুলে যেতে পারব না। সব রাজনৈতিক দলগুলোকে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ জানাব, যার যার রাজনীতি করুন। আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আপনাদের পরিষ্কার করুন।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। সভাপতিত্ব করেন পরিষদের চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মো. শাহ আলম। সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম ও দক্ষিণ জেলা গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব আরিফুল হক।

Related Posts

আইনজীবী আলিফ হত্যা: দুই আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি চন্দন দাস এবং অপর আসামি রিপন দাসের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর মধ্যে চন্দন দাসকে সাত দিন এবং রিপন…

Read more

ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ

শান্তি–সম্প্রীতির প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ রাজনীতিকদের পর ধর্মীয় নেতারাও দেশে শান্তি, সম্প্রীতি এবং স্বাধীন অস্তিত্ব ও মর্যাদার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এ প্রশ্নে তাঁরা দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারের…

Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *