চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষ, হত্যা

২৯ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর মামলা

চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না হওয়াকে ঘিরে সংঘর্ষে আহতের ঘটনায় ২৯ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। ঘটনার সাত দিনের মাথায় আজ মঙ্গলবার নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। মামলায় তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করেন।

এ নিয়ে মোট মামলার সংখ্যা ছয়। এর আগে হত্যা, পুলিশের কাজে বাধাদানসহ আরও পাঁচটি মামলা হয়েছিল।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ জনের বিরুদ্ধে হামলায় আহত করার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ও নগর আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক জহুর লাল হাজারী, নগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ, নগর যুব মহিলা লীগের নেত্রী ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক জিনাত সুহানা চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা সমীর কুমার দে, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রিপন কান্তি নাথ, ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাত আহমেদ, কাজী তানভীর প্রমুখ। মামলার বাকি আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ২৬ নভেম্বর একটি মামলা নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য তিনি চট্টগ্রাম আদালতে আসেন। কাজ শেষে করে বাসায় ফেরার পথে আদালত ভবনের মূল ফটকে রঙ্গম কনভেনশন সেন্টারের সামনে দেখেন আসামিরা সশস্ত্র অবস্থান করছেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাদীকে ধাওয়া দিয়ে মারধর করতে থাকেন। একজন আসামি লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে হাত দেওয়ায় তা পিঠে লাগে। এতে পিঠ থেঁতলে যায়। একপর্যায়ে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পরে বাদী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এ কারণে মামলা করতে দেরি হয়।

জানতে চাইলে বাদী মোহাম্মদ উল্লাহ চৌধুরীর মুঠোফোনে কল করা হলে অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও চারটি মামলা হয়। পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৩৯ জন। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ৯ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। গত সোমবার পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির জন্য ওকালতনামা দিলে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি নেজাম উদ্দীন।

Ctg News 24

Recent Posts

আইনজীবী আলিফ হত্যা: দুই আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি চন্দন দাস এবং অপর…

2 weeks ago

ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ

শান্তি–সম্প্রীতির প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ রাজনীতিকদের পর ধর্মীয় নেতারাও দেশে শান্তি, সম্প্রীতি এবং স্বাধীন অস্তিত্ব ও…

2 weeks ago

ভয়মুক্ত নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভয়মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার কথা বলেছেন,…

2 weeks ago

স্ত্রী হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

তিন বছর সাত মাস পর স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক…

3 weeks ago

চট্টগ্রামে ১০ সরকারি স্কুল

এক আসনের বিপরীতে ৬২টি আবেদন চট্টগ্রামে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি আবেদন…

3 weeks ago

চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জামিন শুনানি পেছালো ২ জানুয়ারি

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা মামলায় সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জামিন শুনানি পিছিয়ে ২…

3 weeks ago