CTG News 24 (CN24) Desk
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর দায়ের করা মামলার আসামি ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পারভেজ হোসেন সন্টুকে গ্রেপ্তার করার পর কোমরে দড়ি বাঁধা অবস্থায় আদালতে হাজির করার ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে ‘কৈফিয়ত তলব’ করা হয়েছে।
কোমরে দড়ি বাঁধা অবস্থায় বুধবার (১৫ মার্চ) সকালে ৪৮ বছর বয়সী ব্যবসায়ী সন্টুকে আদালতে তোলার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অনেকেই সমালোচনামুখর হয়ে ওঠেন।
এরপর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৩ এর পুলিশ সুপার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ ঘটনায় ‘কৈফিয়ত তলব’ করা হয় চট্টগ্রামে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৩ ইউনিটে কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) অরুণ কান্তি বিশ্বাসের কাছে।
পুলিশ সুপারের চিঠিতে এসআই অরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে উল্লেখ করা হয়, বর্ণিত মামলার ২ নম্বর আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় আসামি স্কট করে চালান মোতাবেক ১৫ মার্চ তারিখে চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় আপনি ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ নিজের খেয়ালখুশি মনগড়া মতো আসামির কোমরে রশি বেধে নিয়ে যান। যাতে জনসম্মুখে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
এতে বলা হয়, ‘আপনি সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনীর একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অফিসার হয়ে, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর নিয়ম-শৃঙ্খলা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা সত্বেও উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে নিজ খেয়ালখুশিমতো গুরুত্বপূর্ণ আসামি স্কট ডিউটিতে ডিউটি পার্টির ইনচার্জ হয়ে নিজের দায়িত্ব কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করেননি। আপনার এহেন কর্মকাণ্ড কর্তব্যকর্মে অবহেলা, গাফিলতি, অদক্ষতা, কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য ও বিভাগীয় নিয়ম শৃঙ্খলার পরিপন্থী শাস্তিযোগ্য অপরাধের শামিল।
পুলিশ সুপারের চিঠির শেষাংশে উল্লেখ করা হয়, ‘উপরোল্লিখিত অপরাধের কারণে আপনার বিরুদ্ধে পিআরবি-৮৬১ বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা রুজু করে ৮৫৭ বিধি অনুযায়ী কেন গুরুদণ্ড প্রদান করা হবে না, তার সন্তোষজনক লিখিত জবাবে উল্লেখ করার জন্য বলা হল। আপনি উক্ত সময়ের মধ্যে কৈফিয়ত তলবের লিখিত জবাব প্রদান না করলে, আপনার কোনো জবাব নাই মর্মে উল্লেখপূর্বক একতরফাভাবে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে ওই সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই রিপোর্টে কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কথা উল্লেখ করা হয়। বিস্ফোরণের ঘটনার ওই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের মালিকদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে শিল্প পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি এলাকা থেকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের পরিচালক পারভেজ উদ্দিন সন্টু গ্রেপ্তার হন।