মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিচার শুরু

CTG News 24 (CN24) Desk

নগরের পাঁচলাইশ থানার মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) প্রশিকিউসনের রুমে বিকেলে সাড়ে চার থেকে বিকেলে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এক ঘণ্টা আইনজীবীদের সঙ্গে বাবুল আক্তারের বৈঠকের সুযোগ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৯ এপ্রিল আদালত এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্ব রেখেছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ।

এর আগে দুপুরে একই আদালতে অভিযোগ গঠন বিষয়ে উভয় পক্ষের শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিকেল চারটায় আদেশের জন্য রেখেছিলেন। এ সময় বাবুল আক্তার, আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া ও মোতালেব মিয়া প্রকাশ ওয়াসিমকে আদালতে হাজির করা হয়। এ মামলার আসামিদের মধ্যে জামিনে থাকা এহতেশামুল হক ভোলা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, আমরা এই মামলার অভিযোগ থেকে বাবুল আক্তারের ডিসচার্জ (অব্যাহতি) চেয়ে আবেদন করেছি। এর পক্ষে আমরা যুক্তি উপস্থাপন করেছি। আদালত বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) প্রশিকিউসনের রুমে বিকেলে সাড়ে চার থেকে বিকেলে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এক ঘণ্টা আইনজীবীদের সঙ্গে বাবুল আক্তারের বৈঠকের সুযোগ দিয়েছেন৷ অভিযোগ গঠনের বিষয়ে বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা বলে উচ্চ আদালতে যাব কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বাবুল আক্তারকে ফেনী কারাগারে রাখার একটি আবেদন করা হয়েছিল, আদালত আদেশে বিচারের সুবিধার জন্য চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছেন। জেল কোড অনুযায়ী চিকিৎসাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

আর আগে দুপুরে প্রায় এক ঘণ্টার দীর্ঘ শুনানিতে বাবুলের আইনজীবী শিশির মনির আদালতে বলেন,  প্রথমত এ ঘটনায় প্রথম মামলাটির বাদি ছিলেন বাবুল আক্তার নিজে। পরে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে দ্বিতীয় আরেকটি মামলা করেন। পরে দ্বিতীয় মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। এরপর প্রথম মামলায় অভিযোগপত্র দিল। এ মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য সাফিশিয়েন্ট ডকুমেন্ট নেই।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, মিতু হত্যার পরে ২৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল, তা বর্তমানে মামলার নথিতে নেই। কারণ তারা বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। ঘটনার সময় বাবুল ছিলেন ঢাকায়। মুছাকে দিয়ে হত্যা করানোর অভিযোগ আনা হয়েছে, মুছা কোথায়? ১১ জন সাক্ষী শুরুতে ২০১৭ সালে আর দ্বিতীয়বার ২০২১ সালে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিলেন। দুটো পরস্পর বিপরীত জবানবন্দি৷ গায়ত্রী নামের একজনের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে স্ত্রী মিতুকে হত্যা করিয়েছেন বলে অভিযোগ। গায়ত্রী কোথায়? তাহলে কিভাবে বিচার করবেন?

মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি আসামিদের আদালতে হাজির না করায় অভিযোগ গঠন পিছিয়েছিল। গত ৩১ জানুয়ারি মিতু হত্যায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছা বেগমের আদালত বিচার শুরুর নির্দেশনা দিয়ে তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত ১১ জানুয়ারি সকালে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় বদলি আদেশ দিয়েছিলেন।  গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই অভিযোগপত্র গত ১০ অক্টোবর গ্রহণ করেন আদালত। ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরের জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খানম মিতু।  

Related Posts

আইনজীবী আলিফ হত্যা: দুই আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি চন্দন দাস এবং অপর আসামি রিপন দাসের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর মধ্যে চন্দন দাসকে সাত দিন এবং রিপন…

Read more

স্ত্রী হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

তিন বছর সাত মাস পর স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে…

Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *