সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ : ছয় মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন স্বজনেরা

CTG News 24 (CN24) Desk

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ছয়জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে একজনের আর সন্ধ্যায় বাকিদের মরদেহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিবারের স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়। এরপর স্বজনেরা লাশ নিয়ে নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। ছয় পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল শনিবার বিকেলে শিল্পে ব্যবহৃত অক্সিজেন উৎপাদনের কারখানা সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে নিহত ছয়জন হলেন সীতাকুণ্ড উপজেলার জাহানাবাদ এলাকার শামসুল আলম (৬৫), ভাটিয়ারী বাংলাবাজার এলাকার মো. ফরিদ (৩৬), নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রতন নকরেট (৫১), নোয়াখালীর আবদুল কাদের (৫০), লক্ষ্মীপুরের মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন (৪০) ও ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাটের বাসিন্দা সেলিম রিছিল (৪০)।

এই ছয়জনের মধ্যে শামসুল আলম ও সালাহউদ্দিন কারখানার কর্মী ছিলেন না। ঘটনার সময় তাঁরা ছিলেন কারখানা থেকে অন্তত আধা কিলোমিটার দূরে। বিস্ফোরণের পর লোহার পাত উড়ে এসে শামসুল ও সালাউদ্দিনের মাথায় লাগে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের স্বজনেরা। সেই লোহার পাতের আঘাতে মৃত্যু হয় দুজনের।

সালাউদ্দিনের দুই স্ত্রী আজ সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন লাশ নিতে। সন্ধ্যায় তাঁরা লাশ বুঝে পেয়ে নোয়াখালীর উদ্দেশে রওনা দেন। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে সালাউদ্দিনের স্ত্রী সেলিনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর গ্রামে সালাউদ্দিনের লাশ দাফন করা হবে। তাঁরা অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে যাচ্ছেন।

রতন নকরেটের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দার ছোট মনগড়া এলাকায়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রতনের মরদেহ নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছেন তাঁর শ্যালক মণি ঘাগ্রা। তিনি বলেন, পরিবারে রতনের স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন রতন। তাঁকে হারিয়ে দিশাহারা পুরো পরিবার।

নিহত সেলিম রেছিলের পরিচয় মিলেছে সবার শেষে। সেলিমের বাড়ি ফটিকছড়ির নারায়ণহাটে। তাঁর লাশ নিয়ে সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে রওনা দিয়েছেন শ্বশুর অজয় মারাক, স্ত্রী লিলি মারাকসহ আত্মীয়রা। অজয় মারাক বলেন, ফটিকছড়িতেই সেলিমের সৎকার হবে।

অন্যদিকে মোহাম্মদ ফরিদের দাফন হবে ভাটিয়ারীর বাংলাবাজার এলাকায়। ফরিদের শ্যালক মো. বাবলু বলেন, ফরিদের মৃত্যুতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন স্ত্রী রাশেদা আক্তার। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না। রাতেই ফরিদের লাশ দাফন করা হবে। আবদুল কাদেরের লাশ নিয়ে নোয়াখালীর সুধারামপুরে যাচ্ছেন পরিবারের স্বজনেরা। তাঁর ছেলে মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, গ্রামের বাড়িতে তাঁর বাবার লাশ দাফন করা হবে।

সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের পর গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। তাঁদের মধ্যে ২০ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকি পাঁচজন ভাটিয়ারীর বিএসবিএ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চমেকে চিকিৎসারত কয়েকজনের পা থেঁতলে গেছে, কারও চোখের দৃষ্টিশক্তি চলে গেছে।

ctgnews24bd

Recent Posts

আইনজীবী আলিফ হত্যা: দুই আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি চন্দন দাস এবং অপর…

2 weeks ago

ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ

শান্তি–সম্প্রীতির প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ রাজনীতিকদের পর ধর্মীয় নেতারাও দেশে শান্তি, সম্প্রীতি এবং স্বাধীন অস্তিত্ব ও…

3 weeks ago

ভয়মুক্ত নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভয়মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার কথা বলেছেন,…

3 weeks ago

স্ত্রী হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত সাবেক এসপি বাবুল আক্তার

তিন বছর সাত মাস পর স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক…

3 weeks ago

চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষ, হত্যা

২৯ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর মামলা চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না…

3 weeks ago

চট্টগ্রামে ১০ সরকারি স্কুল

এক আসনের বিপরীতে ৬২টি আবেদন চট্টগ্রামে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি আবেদন…

3 weeks ago