Akber Hussain Shahil, Ctg News 24 (CN24)
হলদে পা হরিয়ালকে দেখতে অনেকটা কবুতরের মত কিন্তু এটি সবুজ এবং হলুদ রঙের মধ্যে ধূসর ফিতার মত এর শরীর। হলদে পা হরিয়াল সাধারণত ৩২ থেকে ৩৪ সেন্টিমিটার লম্বা হয়, এটির লেজ এবং পাখার প্রান্ত ভাগে কালো এবং সাদা দাগ রয়েছে। পুরুষ পাখিদের থেকেও মেয়ে পাখিদের পালক গুলো তুলনামূলক হালকা বলে জানা যায়।
হরিয়াল সাধারণত জানুয়ারি দিকে ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটতে ২১ থেকে ২৫ দিন সময় লাগে এই সময়ে ছেলে হরিয়াল খাবার এর যোগান দেয় এবং সব সময় বাসার কাছেই থাকে মেয়ে হরিয়ালটি ও কখনো বাসা ছেড়ে যায় না তবে সকালের দিকে রোদ পোহানোর জন্য কিছু সময় বাদে। দুই মাস পরে সাধারণত মার্চের দিকে বাচ্চারা মোটামুটি পরিপক্ক হয়ে বেরিয়ে আসে বাসা থেকে।
ভারতীয় উপমহাদেশে এ পাখিটির বিস্তৃতি তবে ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল ছাড়াও শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশেও এ পাখিটির দেখা মেলে। সবুজ রং হওয়ায় অনেকটাই সবুজের সাথে মিশে থাকার কারণে খুব কম সময় এটিকে চোখ দিয়ে আলাদা করে ঠাহর করা যায়, এটি সব সময় গাছের উঁচু ডালে বাসা বাঁধে। আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে এই পাখিটিকে হরিকাল অথবা বটাকাল নামেও ডাকা হয়।
এই পাখিটির চঞ্চু খুবই শক্তিশালী। বলা হয়ে থাকে হলদেপা হরিয়াল এর পা কখনো মাটিতে পড়ে না কথাটি অদ্ভুত শোনালেও এটি অনেকাংশেই সত্যি। আসলে এই পাখিটির মাটিতে নামার প্রয়োজনও পড়ে না কারণ তার যা যা দরকার তা সে গাছেই পেয়ে যায় এবং পানির জন্য তো শিশির এবং গাছে জমানো পানি তো রয়েছেই।
এক সময় আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে না হলেও যথেষ্ট পরিমাণে হলদে পা হরিয়াল এর দেখা মিলতো কিন্তু এখন এই পাখিটির দেখা মেলাই ভার। উঁচু গাছের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং খাবারের সংকট তার উপরে শিকারির কুদৃষ্টি তো রয়েছেই আর এসব কারণে এ পাখিটি বিলুপ্তির শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।
কিছুদিন আগে সীতাকুণ্ডে শীতকালীন পাখি পর্যবেক্ষণকালে আমি এই পাখিটির দেখা পাই, দেখে খুবই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ি আমি যা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না।