চট্টগ্রাম নগরের নাছিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে এ বছর ভর্তির আসন আছে ২২০টি। এই বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রতিবারই আসনের কয়েক গুণ আবেদন জমা পড়ে। ১২ নভেম্বর ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রহমান বলেন, সিডিএ অ্যাভিনিউ সড়কের একেবারে পাশে হওয়ায় বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া খুবই সহজ। এ ছাড়া তাঁরা দক্ষ শিক্ষকের মাধ্যমে পাঠদান করান। ফলে বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে অভিভাবকদের আগ্রহ বেশি থাকে। এবারও ব্যতিক্রম হবে না।
অবশ্য শুধু নাছিরাবাদ নয়, চট্টগ্রামের আরও ৯টি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ১২ নভেম্বর থেকে ভর্তির আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে। একইভাবে শেষ হবে ৩০ নভেম্বর। এরপর ডিসেম্বরে লটারি ও ভর্তির কার্যক্রম শেষে পয়লা জানুয়ারি শ্রেণিকার্যক্রম শুরু হবে। এর বাইরে বেসরকারি বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মতো করে ভর্তির জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ করছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে আবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ফলে বিদ্যালয়গুলোয় এখন চলছে ভর্তির মৌসুম।
আগে কেবল প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির কাজটি হতো লটারির মাধ্যমে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়গুলোয় সব শ্রেণিতেই লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর পর থেকে একই প্রক্রিয়ায় ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করা হচ্ছে।
আবেদনের বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, গত বছর ১০টি সরকারি বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে শূন্য আসনের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪২৪। এবারও প্রায় একই সংখ্যক আসনে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হবে।
গত বছর সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছিল সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ে। পঞ্চম, ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে ওই বছর ভর্তির কার্যক্রম হয়। প্রভাতি ও দিবা শাখায় মোট ৩৫৯টি শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়ে ২৩ হাজার ৯২০টি। শহরে সরকারি স্কুলের সংখ্যা কম হওয়ার কারণেই আবেদন বেশি পড়ছে বলে মনে করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোরশেদুজ্জামান। তিনি বলেন, এ বছর দুই পালায় ৩৩০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে।
চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে এবার পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হবে। প্রভাতি ও দিবা শাখা মিলিয়ে শূন্য আসন ২২০টি। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেহানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির কার্যক্রম চলেছিল। এবার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছে। ফলে শুধু পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হবে।
বেসরকারি পাঁচ বড় স্কুলে ভর্তি কবে
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নগরের দামপাড়া এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। বিদ্যালয়টির মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল ভালো হওয়ার কারণেই সবার এত আগ্রহ। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শুধু নার্সারি শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করাবে। নার্সারিতে প্রভাতি ও দিবা শাখায় ছয়টি সেকশনে ৩৬০টি আসন রয়েছে। ভর্তি ফরম বিতরণ শুরু হবে ১৭ নভেম্বর, শেষ হবে ১ ডিসেম্বর। ৩ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফরম জমা নেওয়া হবে।
পাথরঘাটায় অবস্থিত সেন্ট প্লাসিড স্কুল অ্যান্ড কলেজে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে শিক্ষার্থীরা। যাদের বয়স ছয় থেকে আট বছরের মধ্যে, তারাই আবেদন করতে পারবে। ইতিমধ্যে ভর্তির নোটিশ প্রকাশ করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এতে বলা হয়, ১৭ নভেম্বর আবেদনপত্র বিতরণ শুরু হয়ে ২৬ নভেম্বর শেষ হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চলবে বিতরণ। ১৮ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। আসন আছে ২৩০টি।
জামালখানের সেন্ট মেরীস স্কুলে নার্সারি ও কেজি শ্রেণিতে ভর্তির কার্যক্রম চলবে। গতকাল শনিবার প্রথম দফায় আবেদনপত্র নেওয়ার শেষ দিন ছিল। তবে দ্বিতীয় দফায় আজ রোববার থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আবেদনপত্র নেওয়া যাবে। জমা দিতে হবে ১৬ নভেম্বরের মধ্যে। আবেদনপত্রের সঙ্গে জন্মনিবন্ধন সনদ ও সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিতে হবে। জন্মনিবন্ধন সনদ না থাকলে টিকা সনদ দিতে হবে।
হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে কেজি, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবে। ৬ নভেম্বর আবেদনপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে, চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। লটারি ও ভর্তিবিষয়ক যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে www.hcpsc.edu.bd ওয়েবসাইটে।
অন্যদিকে ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজে দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে (www.cesc.edu.bd) প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইন ও সরাসরি আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাচ্ছে। অনলাইনে আজকের মধ্যেই জমা দিতে হবে। এ ছাড়া ১৪ নভেম্বরের মধ্যে সরাসরি বিদ্যালয়ে গিয়ে আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়েছে, ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার তারিখ ও সময় শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্রে উল্লেখ থাকবে।