জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা

শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত চাইব

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত চাইবে তাঁর সরকার।

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। তিনি বলেছেন, ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করবই। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, তার কাজ বেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব।’

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। ১৫ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হয়।


Login

Eng

By using this site, you agree to our Privacy Policy.OK

ছবি

ভিডিওভিডিও

বাংলাদেশ

জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা

শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত চাইব

বাসস

ঢাকা

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩: ৩৮

ফলো করুন

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসছবি: বাসস

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত চাইবে তাঁর সরকার।

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। তিনি বলেছেন, ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করবই। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, তার কাজ বেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব।’

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। ১৫ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হয়।

জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বৈরশাসনে বিপর্যস্ত এই দেশকে আমাদের সবাইকে মিলে পুনর্গঠন করতে হচ্ছে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর আমরা এমন একটি দেশ হাতে পেয়েছি, যার সর্বত্র ছিল বিশৃঙ্খলা। স্বৈরশাসন টিকিয়ে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিপ্লব চলাকালে প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-শ্রমিক–জনতার শহীদি মৃত্যু হয়। আমাদের সরকার প্রতিটি মৃত্যুর তথ্য অত্যন্ত যত্নের সাথে জোগাড় করছে। এই বিপ্লবে আহত হয়েছে ১৯ হাজার ৯৩১ জন। আহতদের জন্য ঢাকার ১৩টি হাসপাতালসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিনই তালিকায় আরও নতুন নতুন শহীদের তথ্য যোগ হচ্ছে, যাঁরা স্বৈরাচারের আক্রোশের শিকার হয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করবই।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম ১০০ দিন অতিক্রম করার কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনারা জানেন কী কঠিন এক পরিস্থিতিতে আমাদের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব গণ–অভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিস্ট সরকারপ্রধান পালিয়ে গেলে দেশ সরকারশূন্য হয় সাময়িকভাবে। পুলিশ প্রশাসনও এ সময় সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লে উদ্বেগজনক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘কেবল জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডই নয়, আমরা গত ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার করব। অসংখ্য মানুষ গুম হয়েছে, খুন হয়েছে এই সময়ে। আমরা গুমের তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছি। কমিশনপ্রধান আমাকে জানিয়েছেন, অক্টোবর পর্যন্ত তাঁরা ১ হাজার ৬০০ গুমের তথ্য পেয়েছেন। তাঁদের ধারণা, এই সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে। অনেকেই কমিশনের কাছে গুমের অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন এই ভেবে যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্বারা তাঁরা আবার আক্রান্ত হতে পারেন, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা দ্বিধাহীন চিত্তে কমিশনকে আপনাদের অভিযোগ জানান। কারও সাধ্য নেই আপনাদের গায়ে আবার হাত দেয়।’

Login

Eng

By using this site, you agree to our Privacy Policy.OK

ছবি

ভিডিওভিডিও

বাংলাদেশ

জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা

শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত চাইব

বাসস

ঢাকা

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩: ৩৮

ফলো করুন

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসছবি: বাসস

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত চাইবে তাঁর সরকার।

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। তিনি বলেছেন, ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করবই। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, তার কাজ বেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব।’

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। ১৫ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হয়।

জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বৈরশাসনে বিপর্যস্ত এই দেশকে আমাদের সবাইকে মিলে পুনর্গঠন করতে হচ্ছে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর আমরা এমন একটি দেশ হাতে পেয়েছি, যার সর্বত্র ছিল বিশৃঙ্খলা। স্বৈরশাসন টিকিয়ে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিপ্লব চলাকালে প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-শ্রমিক–জনতার শহীদি মৃত্যু হয়। আমাদের সরকার প্রতিটি মৃত্যুর তথ্য অত্যন্ত যত্নের সাথে জোগাড় করছে। এই বিপ্লবে আহত হয়েছে ১৯ হাজার ৯৩১ জন। আহতদের জন্য ঢাকার ১৩টি হাসপাতালসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিনই তালিকায় আরও নতুন নতুন শহীদের তথ্য যোগ হচ্ছে, যাঁরা স্বৈরাচারের আক্রোশের শিকার হয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। প্রতিটি হত্যার বিচার আমরা করবই।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম ১০০ দিন অতিক্রম করার কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনারা জানেন কী কঠিন এক পরিস্থিতিতে আমাদের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব গণ–অভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিস্ট সরকারপ্রধান পালিয়ে গেলে দেশ সরকারশূন্য হয় সাময়িকভাবে। পুলিশ প্রশাসনও এ সময় সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লে উদ্বেগজনক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘কেবল জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডই নয়, আমরা গত ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার করব। অসংখ্য মানুষ গুম হয়েছে, খুন হয়েছে এই সময়ে। আমরা গুমের তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছি। কমিশনপ্রধান আমাকে জানিয়েছেন, অক্টোবর পর্যন্ত তাঁরা ১ হাজার ৬০০ গুমের তথ্য পেয়েছেন। তাঁদের ধারণা, এই সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে। অনেকেই কমিশনের কাছে গুমের অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন এই ভেবে যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্বারা তাঁরা আবার আক্রান্ত হতে পারেন, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা দ্বিধাহীন চিত্তে কমিশনকে আপনাদের অভিযোগ জানান। কারও সাধ্য নেই আপনাদের গায়ে আবার হাত দেয়।’

গত ১৫ বছরের গুমের মর্মান্তিক বিবরণ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গুম কমিশনের সদস্যদের কাছে ভুক্তভোগীদের যে বিবরণ আমরা পেয়েছি, তা অত্যন্ত মর্মান্তিক। জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের পর ছাত্রছাত্রীরা শহর–বন্দরের দেয়ালে দেয়ালে তাদের মনের কথা লিখেছে। তাদেরও আগে যারা গুমের শিকার হয়েছে, প্রতিটি গোপন আস্তানার দেয়ালে দেয়ালে তাঁরা লিখে গেছেন তাঁদের কষ্টের মর্মস্পর্শী বিবরণ। তাঁদের এসব কষ্টের কথা শুনে আমাদের হৃদয় কেঁপে উঠেছে। এসবের সঙ্গে জড়িতদের আমরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবই। অভিযুক্ত যতই শক্তিশালী হোক, যে বাহিনীরই হোক, তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেবল দেশে নয়; গুম, খুন ও জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সাথে জড়িতদের আমরা আন্তর্জাতিক আদালতেও বিচারের উদ্যোগ নিয়েছি। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের প্রধান কৌঁসুলি করিম খানের সঙ্গে আমার এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে কথা হয়েছে।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কোনো সদস্য কিংবা অন্য কেউ যাতে হত্যা, গুমসহ এ ধরনের কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়তে না পারে, এ জন্য আমরা গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছি। আপনারা দেখেছেন, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন। জাতিসংঘ জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের তদন্তে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তারা আমাদেরকে তাদের রিপোর্ট হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অতীতের গুমের ঘটনাগুলো তদন্তকাজেও আমরা নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। মানবাধিকার রক্ষায় সহযোগিতা করতে ঢাকায় তারা তাদের জনবল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছি।’

Related Posts

আইনজীবী আলিফ হত্যা: দুই আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি চন্দন দাস এবং অপর আসামি রিপন দাসের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর মধ্যে চন্দন দাসকে সাত দিন এবং রিপন…

Read more

ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ

শান্তি–সম্প্রীতির প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ রাজনীতিকদের পর ধর্মীয় নেতারাও দেশে শান্তি, সম্প্রীতি এবং স্বাধীন অস্তিত্ব ও মর্যাদার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এ প্রশ্নে তাঁরা দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারের…

Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *