|| CTG News 24 (CN24) ctgnews24 Desk
একটি স্থানে নগর সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে নগরায়ন (Urbanization) বলা হয়। গ্রাম কিংবা অনুন্নত মফস্বল শহর থেকে মানুষ যখন জীবন ও জীবিকার তাগিদে শহরে গিয়ে বসবাস তখন তাকে নগরায়ণ বলা হয়। এছাড়া বর্তমানে দেখা যায়, উচ্চশিক্ষা বা কর্মসংস্থানের এবং উন্নত জীবনের আশায় মানুষ শহরে গিয়ে বসবাস শুরু করে৷ এর ফলে সে শহরের জনবসতি, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ দিনে দিনে বৃদ্ধি পেতে থাকে। সহজ কথায়, বিপুল সংখ্যক মানুষের গ্রাম থেকে শহরে স্থানন্তর, শহরের জনবসতি ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি নগরায়ণ নামে পরিচিত।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ বলতে ঝুঁকির কথা চিন্তা না করে অসমন্বিত, অপরিকল্পিত, অসম ও ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে ধীরে ধীরে একটি নগরের সম্প্রসারণকে বোঝায় যা সাধারণত টেকসই নয়। এটি একাধিক বিক্ষিপ্ত প্রক্রিয়ার একটি ফলাফল যেখানে সম্পদের দক্ষ ও সুষ্ঠু ব্যবহার হয় না।
এখনকার দিনে নগরায়ণ নামের সভ্যতার অগ্রগতি দূষণকে এমন মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে যে সাবেক শহরের কাঠামোয় আর তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া যায় না। প্রশাসনিক নিয়ম , আইন কানুন এবং পৌর আন্দোলন এ ধরনের দূষণ যদিও দূর করতে পারে তবুও শহরের লোকদের ক্ষেত্রে অধিকাংশ একইসঙ্গে দোষী এবং ভুক্তভোগী।’ তবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় বড় নগরীর নাগরিকদের ক্ষেত্রে দোষের তুলনায় ভুক্তভোগীই বেশি বলতে হবে।
বাংলাদেশে অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মূলে রয়েছে দুটি কারণ ১) জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ২) ভূমি ব্যবহার নীতির অনুপস্থিতি। গ্রামঞ্চল থেকে শহরে কাজের খোঁজে প্রচুর লোকের আগমনের কারণে প্রধাণ কিছু শহরে জনসংখ্যা অনেক বেশী। বিশেষ করে বলতে হয় ঢাকা শহরের কথা। ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ২২ মিলিয়নেরও বেশী। এই বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, বাসস্থান সহ আরো অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। ঢাকা শহরের উন্নয়নের জন্য একমাত্র কতৃপক্ষ হল রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ)। বর্তমানে পরিকল্পনা ও উন্নয়নের জন্য যে সকল আইন বলবৎ আছে তা উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত নয়। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিদ্যমান আইনগুলোর সঠিক ব্যবহার করা হয় না। উঁচু এপার্টমেন্টগুলো স্থাপন করা হয় বাসস্থান সমস্যা দূর করার জন্য। কিন্তু বস্তুত দেখা যাচ্ছে যে এই স্থপনাগুলোর কারণেই ঘনবসতির মত খারাপ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। বর্তমানে ঢাকায় খালি জায়গা একেবারেই দুষ্প্রাপ্য। সব জায়গাতেই উঁচু স্থাপনার ফলে জনবসতি এখানে অনেক বেশী ঘন। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে পানি, বিদ্যুৎ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মত জটিল সমস্যা। যেহেতু পরিকল্পনার অভাবে যত্র তত্র বড় বড় এপার্টমেন্ট বিল্ডিং, অফিস আদালত ইত্যাদি গড়ে তোলা হচ্ছে ফলে সৃষ্টি হচ্ছে পরিবেশ দূষন থেকে শুরু করে নানান সমস্যা।
ঢাকা শহর নিয়ে সম্প্রতি করা কয়েকটি গবেষণায় বসবাসের জায়গা হিসেবে ঢাকার এই অবনতি ধরা পড়েছে। এসব গবেষণায় ঢাকায় দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি নগর ব্যবস্থাপনায় নানা সমস্যা ধরা দিয়েছে। একটি সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর নগরের জন্য আয়তন অনুযায়ী জনসংখ্যা সীমিত রাখা, গাছপালা ও জলাভূমি রক্ষা করা আর বায়ু-মাটি দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞরা। এই সবগুলো ক্ষেত্রে ঢাকার অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
জাতিসংঘের হিসাবে বিশ্বের একটি স্বাস্থ্যকর শহরের প্রতি একর এলাকায় ৭০ থেকে ৮০ জন নাগরিকের বসবাস করা উচিত। এটা সর্বোচ্চ ১২০ জন পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩০,০০০/ কি.মি. এর আশেপাশে ।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮৯ সালেও ঢাকা শহরের ১৭ শতাংশ এলাকা ছিল সবুজ গাছপালায় ঘেরা। বিশ্বের স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর পরিবেশের শহরগুলোতে এই বৈশিষ্ট্য থাকে। কিন্তু ২০২০ সালে অর্থাৎ মাত্র ৩০ বছরে তা ২ শতাংশে নেমে এসেছে। মূলত ২০০৯ সাল থেকে ঢাকার সবুজ ও জলাভূমি এলাকা দ্রুত হারে কমেছে। শহরের নতুন আবাসিক এলাকাগুলোতে কিছু কিছু গাছপালা বাড়লেও তা সামগ্রিক চাহিদার তুলনায় খুবই কম।
রাজধানী ছাড়াও নানা ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হওয়ায় ঢাকায় কয়েকগুণ বেশি মানুষের বসবাস, যার চাপ পড়ে সর্বত্র। চট্টগ্রামের ক্ষেত্রেও বাণিজ্যিক নগরী এর মূল ভিত্তি। জনসংখ্যার ব্যাপক চাপ ও শহর ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পনা ও সঠিক বাস্তবায়নের অভাবে এইসব শহরের সামগ্রিক পরিবেশের দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
দেশের প্রতিটি বিভাগে যদি সঠিক ও পরিকল্পিত দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় তাহলে হয়তো নির্দিষ্ট কিছু বড় শহরগুলোতে কাজের খোঁজে যাওয়া লোকের সংখ্যা কমে আসত। আর লোকসংখ্যা কমে গেলে পরিবেশ দূষন থেকে শুরু করে আরো অনেক সমস্যারই সমাধান সম্ভব হত।
একটি বাসযোগ্য শহর তৈরিতে একটি কার্যকর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দীর্ঘমেয়াদী ভূমিকা পালন করতে পারে । ঢাকার জন্য নতুন ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ডিএপি) নিয়ে আলোচনাই প্রমান করে যে এই ধরনের উদ্যোগগুলো নগরবাসীর দীর্ঘমেয়াদী কল্যাণে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি চন্দন দাস এবং অপর…
শান্তি–সম্প্রীতির প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ রাজনীতিকদের পর ধর্মীয় নেতারাও দেশে শান্তি, সম্প্রীতি এবং স্বাধীন অস্তিত্ব ও…
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভয়মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার কথা বলেছেন,…
তিন বছর সাত মাস পর স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক…
২৯ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর মামলা চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না…
এক আসনের বিপরীতে ৬২টি আবেদন চট্টগ্রামে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি আবেদন…