Masudul Hoque Firoz, Senior Columnist
বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অ্যাপ টিকটক। দুই যুগের ও বেশি সময় ধরে হলিউড এবং বলিউড ইন্টারনেট মার্কেটিং এর মাধ্যমে যতটুকু করতে পারেনি, টিকটক তার চেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করেছে শুধুমাত্র ২ বছরের মধ্যেই!
টিকটক এর নিজস্ব তথ্য অনুসারে, নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত টিকটক এর মোট গ্রাহক ১.৫ বিলিয়ন । এর মধ্যে সক্রিয় ব্যাবহারকারী ১ বিলিয়ন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং যুবসমাজ । টিকটক এর সম্মোহনী শক্তি এতটাই প্রবল যে দাবানলের মত ছড়িয়ে পরছে ফোন থেকে ফোনে, ব্রেইন থেকে ব্রেইন এ। কোটি কোটি মানুষ এখন আসক্ত লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার এর নেশায়। এর জন্যে তারা অগ্রাহ্য করছে পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয় সকল শাসন-বারন।
টিকটক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অন্য যে কোন অ্যাপ থেকে সবচেয়ে বেশি হারে গ্রাহকদের ব্যাক্তিগত তথ্য অন্যান্য কোম্পানির সাথে শেয়ার করে। অ্যাপ ব্যাবহার না করলেও এই প্রক্রিয়া চলমান থাকে, যা সত্যিই আশংকাজনক।
টিকটক বর্তমান যুবসমাজের জন্যে ডিজিটাল হেরোইন। এটি মস্তিস্কের নিউরোট্রান্সমিটারের ডোপামিন এর উপর আশ্চর্য প্রভাব বিস্তার করে যা কোন অংশেই নেশাদ্রব্য থেকে কম নয়। কিছুদিন আগে জনৈক টিকটক ব্যাবহারকারী যুবক তার টিকটক ভিডিওতে জানায়, “বই পড়া খুবই স্লো এবং বোরিং, এজন্যে আমি আর পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চাই না।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকটক শুধুমাত্র নিরাপত্তার জন্যে হুমকি নয়, এটি কোমলমতি শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে ভয়াবহ। বিপজ্জনক প্র্যাঙ্ক, যৌনতা, অশ্লীলতা, আপত্তিকর শর্ট ভিডিওগুলো কেড়ে নিচ্ছে যুবসমাজের মনোযোগ প্রদান করার ক্ষমতা।
সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, টিকটকের এই তুমুল জনপ্রিয়তা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য টিকটককে অনুকরণ করতে বাধ্য করছে।
কি আছে আমাদের এই ভবিষ্যতে ? নির্বোধ, চিন্তাশক্তিহীন, আনন্দ-অন্বেষী একটি সম্প্রদায় ?
উত্তর সময়ই বলে দেবে …