জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচনের তারিখ জানানো হবে
জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে জানানো হবে নির্বাচনের তারিখ। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচনের বিষয়টি ঠিক হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে এ কথা বলেন। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্তসহ সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এই সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন, স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক অধিকার, নারীবিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কারে কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশন গঠনের ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। ডিসেম্বর বা জানুয়ারির প্রথম দিকে অধিকাংশ কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের কথাও বলা হচ্ছে।
নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, নির্বাচনের বিষয়টি সরকারের নজরে আছে বলেই নির্বাচনী উদ্যোগ আছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। অন্যান্য কার্যক্রমও চলমান আছে।
মাহফুজ আলম বলেন, সরকারের দিক থেকে দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, সংস্কার, বাংলাদেশের জনগণ যে জন্য জীবন দিয়েছে, এই সংস্কারের একটি দৃশ্যমান প্রক্রিয়া হওয়ার পরই নির্বাচন হবে। সংস্কার কার্যক্রম চলমান আছে। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনগুলো আসুক।
নির্বাচন নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, ছয় সংস্কার কমিশনকে (প্রথম ঘোষিত) ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন ডিসেম্বরের মধ্যেই দেবেন। কেউ কেউ বলেছেন এক-দুই সপ্তাহ সময় বেশিও লাগতে পারে। এই সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনের একটি সম্পর্ক আছে। এই সংস্কারের প্রস্তাবগুলো আসবে, এগুলোর ওপর জনগণ কথা বলবে, চূড়ান্ত একটি সংস্কার প্রস্তাবনা হবে, সেই মোতাবেক যে পদক্ষেপ নেওয়া, তা তাঁরা নেবেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘আমরা বারবার বলছি, যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার শেষ করে আমরা নির্বাচনের দিকে যাব। নির্বাচন শুরু করার প্রাথমিক কাজগুলো কিন্তু হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। কাজেই জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করেই তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।’
ইসকন নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ
ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে—এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কোনো সংস্থা নিষিদ্ধ করার কোনো আলোচনা সরকারের মধ্যে হয়নি। দাবি উঠতে পারে। দাবি নিয়ে মানুষ কর্মসূচিও দিতে পারে। ব্যক্তির অপরাধের সঙ্গে সংস্থার অপরাধকে সরকার জড়িয়ে ফেলছে না। একটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর ব্যাপারে একটি আইনি প্রক্রিয়া চলছে। তিনি অভিযুক্ত হতে পারেন, না-ও হতে পারেন। সেটি আদালত দেখবেন।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘পত্রিকায় দেখেছেন ইসকনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়েছে তাদের সঙ্গে যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার কোনো সম্পর্ক নেই।’