|| CTG News 24 (CN24) ctgnews24 Desk
প্রতিবারের মত এইবারও ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ১২ই বৈশাখ (২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ২৫ এপ্রিল) ঐতিহাসিক লালদিঘীর ময়দানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জব্বারের বলী খেলা। আজ বেলা ৩টায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এর ১১৪ তম আসরের উদ্বোধন করেন।
১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর এই প্রতিযোগিতার সূচনা করেন ।তার মৃত্যুর পর এই প্রতিযোগিতা জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। জব্বারের বলীখেলা একটি বহুল জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যমন্ডিত প্রতিযোগিতা তথা মেলা হিসেবে পরিচিত। আবদুল জব্বারের নাতি ও মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল বলেন, ‘মেলাটি চট্টগ্রামবাসীর ঐতিহ্য। ১৯৮৬ সাল থেকে বাপ-দাদার কাছ থেকে বংশানুক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে এই মেলার আয়োজন করে যাচ্ছি প্রশাসনের সহায়তায়।
বলীখেলাকে কেন্দ্র করে লালদিঘী ময়দানের আশে পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়। এটি বন্দর নগরী চট্টগ্রামের এলাকার সবচেয়ে বৃহৎ বৈশাখী মেলা।
এবারও মেলাতে দেখা মিলেছে বাহারি মিঠাই, চুটকি, মণ্ডা,শুকনা মিষ্টি্।এসেছে ঝাড়ু , হাঁড়ি-পাতিল, দা-খুন্তি সহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত যাবতীয় সামগ্রী । আবার কেউ নিয়ে এসেছেন,হাতপাখা, শীতলপাটি, মাটির খেলনা, গাছের চারা, তামা-কাঁসা-পিতলের সামগ্রী, দোলনা, গৃহসজ্জার সামগ্রী, দা-খুন্তি, খাবারসামগ্রী, মাছ ধরার জাল, মোড়া, পিঁড়ি আরও কত কি।
আরও জানা যায় যে, ব্যতিক্রমধর্মী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য ব্রিটিশ সরকার আবদুল জব্বার মিয়াকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছাড়াও বার্মার আরাকান অঞ্চল থেকেও নামী-দামি বলীরা এ খেলায় অংশ নিতেন।
ধারনা করা হয়ে থাকে, চট্টগ্রামে প্রায় ২২টি মল্লা পরিবার ছিল। যাদের বসবাস ছিল চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে। প্রকৃতপক্ষে এই মল্লারা ছিলেন সুঠাম দেহের অধিকারী সাহসী পুরুষ এবং তাদের বংশানুক্রমিক পেশা হচ্ছে শারীরিক কসরৎ প্রদর্শন। এই মল্লবীরেরাই ছিলেন বলিখেলার প্রধান আকর্ষণ ও বলিখেলা আয়োজনের মূল প্রেরণা।
বর্তমানে জব্বারের বলী খেলা বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি “চ্যানেল আই” তে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়ে থাকে।